সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একজন ব্যবসায়ী হিসাবে আপনার শরীরের প্রতি কতোটা যত্নবান? Importance of Fitness of a business man


আজ আলোচনা করব একজন বিজনেস ম্যানের সুষ্ঠভাবে বিজনেস পরিচালনা করার জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে ফিট থাকার কতোটা জরুরী এবং সহজে কিভাবে তা সম্ভব।।


কেন ফিট থাকা জরুরী:


কজন বিজনেস ম্যান সারাদিন বিজনেসের কাজে ভীষনভাবে ব‌্যস্ত থাকেন। মেন্টাল প্রেসার থাকে। ব্যাস্ততার জন্য অনেকসময়ই ব্রেকফাস্ট স্কিপ হয়। হয়তো বা এক কাপ চা বিস্কুট দিয়েই দুপুর 2 টা - 3 টা পর্যন্ত কাটিয়ে ফেলেন। তারপর অনেকেই লাঞ্চে ফাস্টফুড খেয়ে নেন। অনেক রাতে ডিনার। কিন্তু মনে রাখতে হবে এভাবে বেশকিছুদিন চললে শরীরে বড়োসড়ো সমস্যা আসতে বাধ্য। তখন কিন্তু আর শান্তিতে ব্যাবসার কাজে করতে পারবেন না। শারীরিক অসুস্থতার কারনে ব্যাবসায় একটা ঋনাত্মক প্রভাব পড়বে। তখন কিন্তু আপনার শারীরিক ফিটনেস 

শত চিকিৎসা করেও ফিরে আসবেনা। 

ঠিক যেমন দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিতে হয় ঠিক সেভাবেই ফিটনেস বজায় রাখতে হয়। বিষয়টা এখন অবহেলা করলে পরে পস্তাতে হবে।

 এবিষয়টায় গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য বেশিরভাগ বিজনেস ম্যান কম বয়সেই সুগার , ব্লাডপ্রেসারকে জীবনের সঙ্গী করে ফেলেছেন। তাই আপনাকে বলি এখনই লাইফ ষ্টাইল সুধরে নিতে হবে ।


''আজই সচেতন হতে হবে নতুবা আগামী দিন মূল্য চোকাতে হবে''


কিভাবে নিজেকে ফিট রাখা যায় 


আদর্শ লাইফ ষ্টাইল 


1.ভোরে 4-5 টার মধ্যে বিছানা ছাড়ুন।

ঘুম ভাঙলে বিছানায় বসে ঈশ্বরকে সহ সবাইকে ধন্যবাদ দিন আবার একটা সুন্দর দিন উপহার দেওয়ার জন্য। 


2. জল পান

  ঘুম থেকে উঠে মুখ না ধুয়ে প্রথমেই বাসি মুখে তামার পাত্রে রাখা জল (500 ml এর বেশি) পান করে পেট সাফ করুন। সারাদিনে 3-5 লিটার জল পান করতে পারলে ভালো। সবসময় কোনকিছু খাওয়ার এক ঘন্টা পর জল পান করলে খাবার সহজে হজম হয়।


3. প্রতিদিন 20 মিনিট প্রাণায়াম করুন:  

এক গ্লাস লেবু জল/ মেথি ভেজানো/ এক কাপ গ্রীণ জুস (মধু সহ) পান করে 20 মিঃ প্রাণায়াম ( ডিপ ব্রিদিং, কপালভাতি, অণুলোম বিলোম, ভ্রামরী) করুন। এতে এতে ফুসফুস , হার্ট শক্তিশালী হবে। মানসিক চাপ দূর হবে। জটিল রোগগুলোর অন্যতম কারন মানসিক চাপ বৃদ্ধি।


4. প্রতিদিন হাঁটুন: 

30 মিঃ (4-5কিমি) হাঁটুন/ এক্সারসাইজ করুন।  এতে চর্বি কমবে,  পেশি টান টান থাকবে। হার্ট সচল থাকবে। রক্তচাপ কমবে। শরীর ও মন তরতাজা থাকবে। 


5. সকালে ফল খান :

সকালের প্রাতরাশে কেবল ফল (খোসা ছাড়া 700 গ্রাঃ এর অধিক)  রাখলে সর্বোত্তম। এতে বডি রিপিয়ারিং হবে।


6. গায়ে রোদ লাগান

সকাল 10 টার মধ্যে 20 মিঃ গায়ে রৌদ্র মাখুন। এতে ভিটামিন D তৈরি হবে ফলে হাড়, দাঁত মজবুত এবং ইমিউনিটি বাড়বে। রোদে বসে টিফিন খেতে পারেন। কোন কিছু খাওয়ার 1 ঘন্টা বাদে চা পান করলে চায়ের ট্যানিন এর প্রভাবে খাবারের মধ্যস্থ আয়রন নষ্ট হবেনা। ফলে আয়রনের ঘাটতি হবেনা।


7. দুপুরের খাবার

লাঞ্চে (12- 2 টার মধ্যে) ও ডিনারের (5-7 টার মধ্যে) আগে ভেজ স্যালাড(300 গ্রাঃ এর বেশি) অবশ্যই খেতে হবে। তেল, মসলা স্বাস্থ্যকর হওয়া চাই। গ্যাস , এ্যাসিড মুক্ত থাকবেন। খাওয়ার 1 ঘন্টা বাদে ধীরে ধীরে জলপান করলে ভালোভাবে হজম হবে।


8. প্যাকেজ ফুড এড়িয়ে চলুন :

প্রাণীজ  খাদ্য, বোতলবন্দী, প্যাকেটজাত, ঠান্ডা পানীয় , ফাষ্টফুড, ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ফুড কঠোরভাবে এড়িয়ে চলুন। এগুলোতে প্রাকৃতিক উৎসেচক নষ্ট হয়ে যায় ফলে হজম হয়না। শরীর অপুষ্ট থাকে  ওজন বাড়ায়। পরিবর্তে অঙ্কুরিত ছোলা, মুগ, বাদাম, কিসমিস, কাজু, আমন্ড, ফল, ডাব খান।


9. প্রতিদিন অন্তত একজনের উপকার করুন 

এতে মন ভালো থাকবে, ঈশ্বরের আশীর্বাদ অর্জন হবে। বাড়িতে সবারসাথে আনন্দমুখর কিছুটা সময় প্রতিদিন কাটান । মাসে অন্তত একদিন সবাইকে নিয়ে কাছেপিঠে কোথাও বেড়িয়ে আসুন । একঘেয়েমি কাটবে। জীবনে বৈচিত্রের আসবে।


10. জেনেবুঝে কারো সাথে অন্যায় নয়

দুর্নিতিকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় নয়। সজাগ থাকতে হবে নিজের আচরনে যেন অন্যের মনে বিন্দুমাত্র আঘাত না লাগে। দান ও সাহায্য করে কোনরুপ প্রচার নয়। প্রাপ্ত সকল আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নিন। অপরের দুঃখে যথাসাধ্য পাশে দাঁড়ান। মুখের ভাষায় লাগাম টানুন। ভাষায় বিনয় ও নম্রতা বজায় রাখুন। পোষাক ও চেহারায় মার্জিত রুপ থাকুক। মনে রাখবেন দাঁড়ি পাল্লার একদিকে যেরুপ নিজ ব্যাক্তিত্ব অপরদিকে থাকবে ততোটাই প্রাপ্তি।


11. রাত 10-11টার  মধ্যে নিদ্রা 

ঘুমোতে যাওয়ার এক ঘন্টা আগে মোবাইল ফোন, টিভির সুইচ অফ করতে হবে। রাত আটটার পর জলপান করবেন না। এতে প্রস্রাবের বেগ আসার কারনে নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটে।


12. কাজ ফেলে রাখবেন না

এখনের কাজ এখন ই সারুন।  কোনকিছু কাজ করা বা বলার আগে একটু থামুন । পরিকল্পনা করুন । কিভাবে উপস্থাপন করলে আরো সুন্দর, কার্যকরি, প্রভাবশালী হয় একটু ভেবে নিন। তারপর শুরু করুন/বলুন।

13. করোনার জন্য সচেতনতা 

পরিশেষে বলি করোনার সময় মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, ভ্যাকসিন নেওয়া, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন, ঠিকঠাক ঘুম ও শরীর চর্চা আপনার ও আপনার পরিবারের নিরাপত্তা বজায় রাখবে।


আজ থেকে আগামী তিনমাস এগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। দেখতে পাবেন ম্যাজিক্যাল পরিবর্তন। সবকিছুই আপনার নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। সকল পরিস্থিতিই আপনার অনুকূলে চলে আসবে।

বি দ্রঃ  এই লিঙ্কটা আপনজনদের শেয়ার করুন , তাদের সুস্থ্য থাকতে উদ্বুদ্ধ করুন।।



মন্তব্যসমূহ